শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যা উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা, প্রবাসী ও নেশাগ্রস্থ স্বামী নজরুল ইসলাম মাদবর(৪০) তাহার স্ত্রী আমেনা বেগমকে নিজ হাতে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে নৃশংস ভাবে খুন করেছে।
গত ১৬ই (ফেব্রুয়ারী) রোজ মঙ্গলবার সকাল ০৯.৩০মিনিটের সময় নজরুলের নিজ বাড়িতে আমেনা বেগম কে কুপিয়ে হত্যার করে। হত্যার পর থেকেই খুনি নজরুলের বিচারের দাবিতে আওয়াজ উঠতে থাকে বিভিন্ন মহল থেকে।এলাবাসি ও সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠন, নারী, পুরুষ রাস্তায় মানববন্ধনে নেমেছে নেশাগ্রস্ত ও খুনি নজরুল ইসলামের বিচারের দাবিতে।
স্ত্রীকে হত্যার পর ফেসবুকে লাইভে এসে গান গেয়ে ও কথা বলে সবাইকে নিহত স্ত্রীর খাটের ওপর শুয়ে থাকা রক্তাক্ত মৃত দেহ দেখিয়েছেন মাদক সেবনকারী ও খুনি, স্বামী নজরুল ইসলাম।তাই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে সোচ্চার পুরো শরীয়তপুর জেলা।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল (বুধবার) বিকেল ০৫.৩০মিনিটের সময় বুড়িরহাট বড় ব্রিজের উপর সামনের সড়কে আমেনা হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান সমন্বিত প্ল্যাকার্ড বহন করা হয়।
আমেনা হত্যার সঠিক বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও জানান মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।
মোসাঃআমেনা বেগম (৩৬) নামের ঐ গৃহবধূকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বামী নজরুল ইসলাম মাতবর(৪০)কে গ্রেফতার করেছে ডামুড্যা থানা পুলিশ। মরদেহ উদ্ধার করে ঐ দিনই ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নজরুল ইসলাম মাতবর মালয়েশিয়ায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতো। সেখানে ছাদ থেকে পড়ে তার দুই পা ভেঙে গুরুতর আহত হয়ে করোনা মহামারির সময় দেশে চলে আসেন।তখন স্ত্রী সহ সে শরীয়তপুরের বাড়িতেই থাকতো। তাদের ছেলে নয়ন(১২) ঢাকার একটি মাদরাসায় পড়াশোনা করে। ছেলে ঢাকায় থাকে।
এলাকাবাসি বলেন, প্রায় সময়ই মাদক সেবন করতো এই নজরুল,২-১দিন পর পরই তার স্ত্রী আমেনার সাথে অহেতুক ঝগড়া করতো এবং এ নিয়ে কয়েকবার এলাকায় দরবার শালিসও হয়েছে।
নিহত আমেনার ভাই সুলতান মাদবর বলেনঃ-গত ১৫দিন আগেই আমরা দরবার, শালিস করে আমার বোন আমেনা কে নজরুলের সাথে সংসার করার জন্য পাঠিয়েছিলাম।নজরুল একজন নেশাগ্রস্ত ব্যাক্তি কিন্তু আমরা কখনো ভাবিনি সে আমার বোন কে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে এমন নৃশংস ভাবে হত্যা করবে। তাই ডামুড্যা থানায় আমি নিজে বাদী হয়ে খুনি নজরুল সহ মোট ৫জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছি।
গত (মোঙ্গলবার) আমেনা বেগমের চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন ঘরে প্রবেশ করতে চাইলেও ঘরের ভেতরে দরজা বন্ধ থাকার কারণে ঢুকতে পারেনি। কেউ ঘরে ঢুকার চেষ্টা করলে গ্যাসের সিলিন্ডার দিয়ে পুরো ঘর জ্বালিয়ে দেয়ারও হুমকিও দেন খুনি নজরুল। পরে ফেসবুক লাইভে এসে সবাইকে লাশ দেখায় এবং গান গাইতে থাকে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ এসে নজরুলকে বুঝিয়ে ঘরের দরজা খুলে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
ডামুড্যা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃজাফর আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় খুনি নজরুল ইসলাম কে বিভিন্ন প্রমাণসহ গ্রেফতার করা হয়েছে এবং শিকারউক্তি নেওয়া হয়ে গেছে।তার স্ত্রী নিহত আমেনা বেগমের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বেপারে নিহত আমেনা বেগমের ভাই সুুুলতান মাদবর বাদী হয়ে ডামুড্যা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।